তেলের জন্য গত এক সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একমাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা। এতে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে রোগীর স্বজনদের গুনতে হচ্ছে প্রায় তিনগুণ টাকা। জরুরি প্রয়োজনে বিপাকে পড়া সাধারণ রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার প্রায় পৌণে পাঁচ লাখ লোকের জন্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি মাত্র সরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। চালকও রয়েছেন একজন।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে সোনাগাজী ফিলিং স্টেশনে তেলের বকেয়া জমেছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। বার বার তাগিদ দেয়ার পরও সংশ্লিষ্টরা সরকারি বরাদ্দকৃত এ টাকা পরিশোধ করতে ব্যার্থ হওয়ায় পেট্টোল পাম্প কর্তৃপক্ষ অ্যম্বুলেন্সটিকে বাকীতে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছেন।
ফলে গত ১ জুলাই থেকে অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ রেখে নির্মাণাধীন ভবনের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তেল বরাদ্দ না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তেল বরাদ্দ না পেলে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করা সম্ভব হবে না।
মেসার্স সোনাগাজী ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার আলাউদ্দিন বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পাম্পটি চালানো হচ্ছে। গত ছয়মাসে অ্যাম্বুলেন্সটির প্রায় পাঁচ লাখ টাকা বাকী পড়েছে। জুন ক্লোজিংয়ে বরাদ্দ না দেয়ায় প্রতিষ্ঠানটি বাকিতে অ্যাম্বুলেন্সের তেল দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।
সেবা নিতে আসা উপজেলার সোনাপুর চরগ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এর ফলে আমার ভাতিজিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার সময় বিপাকে পড়তে হয়েছে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ৬০০ টাকা হলেও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সে দুই হাজার টাকায় নিতে হয়েছে।
আসমা আক্তার নামের সমপুর গ্রামের অপর একজন বলেন, তার বোনের ডেলিভারি করাতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ফেনী জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত ভাড়ায় অ্যাম্বুলেন্স এনে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। ততক্ষণে বোনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে।
সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালক নুর করিম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ রয়েছে। পেট্রোল পাম্প বাকিতে তেল দিচ্ছে না, তাই অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ রয়েছে। এভাবে যদি অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ থাকে তাহলে অচল হয়ে যাবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. উৎপল দাস বলেন, তেল বরাদ্দ না থাকায় আপাতত অ্যাম্বুলেন্স সেবা বন্ধ রয়েছে। তেল বরাদ্দ পাওয়া গেলে এ সেবা চালু করা সম্ভব হবে। বিষয়টি আমি সিভিল সার্জন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওকে জানিয়েছি।
সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন বলেন, পেট্টোল পাম্প মালিকের সঙ্গে কথা বলে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাম্বুলেন্সটি চালুর চেষ্টা করছি।
টিএইচ